Recent in Technology

মৌখিক পরীক্ষায় চাকরিপ্রার্থী জানালেন ঘুষ দেওয়ার কথা, ফলাফল স্থগিত

প্রতিনিধি 
বদরগঞ্জ ও তারাগঞ্জ, রংপুর

ঘুষপ্রতীকী|ছবি

চাকরিপ্রত্যাশীদের মৌখিক পরীক্ষা চলছিল। একের পর এক প্রার্থী উপস্থিত হয়ে ভাইভা বোর্ডের সদস্যদের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যাচ্ছিলেন। রুনা লায়লা নামের এক পরীক্ষার্থীর কাছে প্রশ্ন ছিল, চাকরির জন্য কাউকে টাকা দিয়েছেন কি না? উত্তরে রুনা জানান, চাকরি পেতে তাঁর বাবা ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন।

রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় গত বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে। এখানকার উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের আওতায় ‘পেইড পিয়ার ভলান্টিয়ার’ (পিপিভি) নিয়োগে আবেদনকারী প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে। এরপর ওই পরীক্ষার ফলাফল স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এই নিয়োগের ভাইভা বোর্ডের সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান রুহুল আমিন। সহসভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ তামান্না। বুধবার মৌখিক পরীক্ষায় ওই প্রার্থী ঘুষ দেওয়ার কথা স্বীকার করার পর ইউএনও জানতে চান, ‘ঘুষের টাকা কাকে দিয়েছেন?’ পরীক্ষার্থী তখন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রুহুল আমিনের নাম বলেন। এ সময় রুহুল আমিন সবার সামনে ওই পরীক্ষার্থীর বাবাকে ফোন দিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, ‘আপনি নাকি আমাকে চাকরি পেতে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন? আপনার মেয়ে এসব কেন বলছেন?’

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ইউএনও নাহিদ তামান্না প্রথম আলোকে বলেন, ওই নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অনিয়ম–দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় গতকাল বৃহস্পতিবার পরীক্ষার ফলাফল স্থগিত রাখা হয়েছে। তদন্ত করে পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ওই চাকরির জন্য দেওয়া বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা গেছে, গঙ্গাচড়া উপজেলার দুর্গম ও কম অগ্রগতিসম্পন্নœএলাকায় পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রমে গতি আনতে ২৩ জন পেইড পিয়ার ভলান্টিয়ার নিয়োগ করার জন্য দরখাস্ত আহ্বান করা হয়। এতে ৯৪ প্রার্থী আবেদন করেন। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের অধীনে ক্লিনিক্যাল কন্ট্রাসেপশন সার্ভিসেস ডেলিভারি প্রোগ্রাম (সিসিএসডিপি) অপারেশন প্ল্যানের আওতায় এই কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে।

অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বলেন, ‘আমি কোনো টাকা নিইনি। ভাইভা বোর্ডে ওই পরীক্ষার্থী আমার সামনেই বলেছেন, চাকরি পেতে তাঁর বাবা নাকি আমাকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন। এতে আমার মাথা হেট হয়ে গেছে। আমি একজন সৎ মানুষ। ওই পরীক্ষার্থী কেন এটা বলেছেন, তা নিজেও বুঝতে পারছি না।’

এ প্রসঙ্গে রংপুরের জেলা প্রশাসক চিত্রলেখা নাজনীন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ভাইভাবোর্ডে এক পরীক্ষার্থীর সঙ্গে ইউএনওর ওই কথোপকথনের ঘটনা শুনেছেন। যেহেতু পরীক্ষার্থী চাকরি পেতে টাকা দেওয়ার কথা ভাইভাবোর্ডে বলেছেন, তাই ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

Ad Code

Responsive Advertisement