Recent in Technology

যত্নে পালা ‘রাজাবাবু’কে বিক্রি করে জমি কিনে বাড়ি বানাতে চান হালিমা

নিজস্ব প্রতিবেদক,কুষ্টিয়া
আপডেট: ১৯ জুন ২০২৩ইং

ফ্রিজিয়ান জাতের এই গরুর উচ্চতা প্রায় ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি। লেজ থেকে মাথার দৈর্ঘ্য প্রায় আট ফুট। গতকাল রোববার কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার সদকী ইউনিয়নের উত্তর মূল |ছবি সংবাদ একাত্তর

টিনশেডের মেঝেপাকা ঘরে রাখা হয় রাজাবাবুকে। দিনের বেলায় ঘরের সামনের আমগাছে বেঁধে রাখা হয়। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত খাবার খায় ৬০০ থেকে ৭০০ টাকার। অতিরিক্ত গরমে হাতপাখা দিয়ে বাতাসও করতে হয় কালো রঙের রাজাবাবুকে।

এভাবেই চার বছর ধরে রাজাবাবু নামের গরুটি লালন–পালন করেছেন হালিমা খাতুন। তিনি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার সদকী ইউনিয়নের উত্তর মূলগ্রামের বাসিন্দা জসিম মোল্লার স্ত্রী। জীবিকার জন্য প্রবাসজীবন কাটাচ্ছেন জসিম। বাড়িতে তাঁর স্ত্রী হালিমা খাতুন গৃহিণীর কাজ করেন। পাশাপাশি তিনি গরু লালন–পালন করছেন। এবারে কোরবানির ঈদে সেটি বিক্রি করতে চান।

ফ্রিজিয়ান জাতের এই গরুর উচ্চতা প্রায় ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি। লেজ থেকে মাথার দৈর্ঘ্য প্রায় আট ফুট। যার ওজন আনুমানিক ৯৫৭ কেজি অর্থাৎ ২৩ মণের বেশি। হালিমা গরুটির দাম বলছেন ১০ লাখ টাকা।

প্রায় ২৩ মণ ওজনের গরুটিকে ১০ লাখ টাকায় বিক্রি করতে চান হালিমা খাতুন |ছবি সংবাদ একাত্তর

পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ছয় বছর আগে জসিম মোল্লার সঙ্গে একই এলাকার মো. চাঁদ আলীর মেয়ে হালিমা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পরের বছর ইরাকে পাড়ি জমান জসিম মোল্লা। হালিমা খাতুনকে তখন একটি বাছুরসহ গরু কিনে দেন চাঁদ আলী। সেই বাছুরটিই আজকের বিশাল ষাঁড় ‘রাজাবাবু’।

প্রায় চার বছর ধরে ঘাস, খড়, ছাল, ছোলা, ভূট্টাসহ বিভিন্ন খাবার দিয়ে নিজের সন্তানের মতোই গরুটিকে পালন করেছেন বলে জানান হালিমা খাতুন। তিনি বলেন, দেখতে সুন্দর ও বিশাল দেহের অধিকারী হওয়ায় তিনি আদর করে নাম রেখেছেন রাজাবাবু। প্রতিমাসে খাবাবের জন্য রাজাবাবুর পেছনে প্রায় ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রায় ২৩ মণ ওজনের গরুটিকে তিনি ১০ লাখ টাকা হলে বিক্রি করবেন।

রাজাবাবুকে বিক্রি করে নানা স্বপ্নপূরণের চিন্তা করছেন হালিমা। তিনি বলেন, গরু বিক্রির টাকা দিয়ে তিনি পালনের জন্য প্রায় এক লাখ টাকার মধ্যে একটি গরু কিনবেন। বাকি টাকা দিয়ে জমি কেনা ও বাড়ি তৈরির ইচ্ছা রয়েছে।

হালিমা খাতুনের বাবা মো. চাঁদ আলী বলেন, চার বছর আগে তিনিই মেয়েজামাইকে বাছুরসহ একটি গাভী কিনে দিয়েছিলেন। সেই বাছুরটিই এখন হাতির মতো দেখতে লাগে। বাড়ি থেকেই তিনি গরুটিকে ১০ লাখ টাকায় বিক্রি করতে চান।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জসিম মোল্লা জানান, তাঁর বাড়িতে তেমন লোকজন নেই। বড় গরু বাজারে আনা–নেওয়া সমস্যা। আবার ঈদও চলে আসছে। বেচাবিক্রি নিয়ে তিনি দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।


Ad Code

Responsive Advertisement