Recent in Technology

আমবয়ানে দ্বিতীয় দিন শুরু, চলছে জিকির-ইবাদত

সংবাদদাতা 
গাজীপুর,

নিবার সকাল নয়টা। ইজতেমা মাঠের ৩ নম্বর সড়ক। সড়কের দুই পাশেই মুসল্লিদের খিত্তা (নির্ধারিত জায়গা)। ডানে-বাঁয়ে যত দূর চোখ যায়, মানুষ আর মানুষ। কেউ বসে বয়ান শুনছেন, কেউ রান্নাবান্না, কেউবা ব্যস্ত ইবাদত ও আনুষঙ্গিক কাজে। আছে মাঘের কনকনে শীত, ঘন কুয়াশার সঙ্গে ঠান্ডা বাতাস। তবু মুসল্লিরা ব্যস্ত যে যাঁর কাজে।

গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগতীরে দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় দিন এভাবেই শুরু করেছেন মুসল্লিরা। কাল রোববার আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে এ বছরের ইজতেমা।

তাবলিগ জামাতের দুপক্ষের বিরোধের কারণে এবারও বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে আলাদাভাবে। প্রথম পক্ষ বা মাওলানা সাদ কান্ধলভির বিরোধী হিসেবে পরিচিত মাওলানা জুবায়ের অনুসারীরা ইজতেমা পালন করেন ১৩ থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। আর গতকাল শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে দ্বিতীয় পক্ষ বা মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীদের ইজতেমা। তাঁদের ইজতেমা চলবে কাল পর্যন্ত।

আজ ফজরের নামাজের পর ভারতের মাওলানা ইয়াকুব জিলানির বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দ্বিতীয় দিনের কার্যক্রম। তাঁর বয়ান অনুবাদ করেন বাংলাদেশের মাওলানা মনির বিন ইউসুফ। ইজতেমাকে ঘিরে টঙ্গীর তুরাগতীরে এখন হাজারো মানুষের সমাগম। সড়ক-মহাসড়ক ধরেও হাঁটছেন মুসল্লিরা।

সকাল থেকে ইজতেমা মাঠ ঘুরে দেখা যায়, বিশাল শামিয়ানার নিচে খিত্তা অনুসারে অবস্থান করছেন অংশগ্রহণকারীরা। মাঠে পাটি ও চট দিয়ে বিছানা পেতে বসে বয়ান শুনছেন মুসল্লিরা। কেউ ব্যস্ত সকালের রান্নায়। কেউ কেউ দুপুরে ভিড় হবে ভেবে আগেই ভিড় জমিয়েছেন গোসলের জায়গায়। অন্য কাজে ব্যস্ত থাকলেও তাঁদের মনোযোগ ছিল বয়ানের মাইকের দিকে।

ফজরের নামাজের পর শুরু হওয়া বয়ান শেষ হয় সকাল ১০টার দিকে। এরপর দ্বিতীয় বয়ান শুরু হবে জোহরের নামাজের পর। এর মাঝের সময়টাতে মুসল্লিরা ব্যস্ত থাকবেন তাবলিগ জামাতের নিজেদের মধ্য ইসলামি আলোচনা, জিকির-আসকার ও অন্যান্য কাজকর্মে।

ইজতেমায় অংশ নিতে আসা মুসল্লিদের অনেকই মাঠের ভেতর নিজ নিজ খিত্তা খুঁজে পাননি। আবার অনেকেই মানুষের ভিড়ে দলছুট হয়ে ঘুরছিলেন এদিক–সেদিক। কেউ কেউ রাত্রিযাপন করেছেন অন্যের খিত্তায় বা সাথি-বন্ধুদের সঙ্গে। মাঠে হাজারো মুসল্লি। অনেক ভিড়। তবু তাঁদের মধ্যে নেই কোনো হইহুল্লোড় বা বিশৃঙ্খলা।

কথা হয় যশোরের বেনাপোল থেকে আসা মো. ইদ্রিস আলীর সঙ্গে। তাঁরা ২৩ জনের একটি তাবলিগ দল এসেছেন ইজতেমায়। ষাটোর্ধ্ব এই ব্যক্তির ওপর পড়েছে সকালের রান্নার দায়িত্ব। সঙ্গে আরও দুজনকে নিয়ে সকালের রান্না করছিলেন তিনি। সঙ্গে শুনছিলেন বয়ান। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ তিন বছর পর আবার ইজতেমা শুরু হলো। সব ভাইকে একসঙ্গে পেয়ে খুব ভালো লাগছে। আমার দায়িত্ব পড়েছে রান্নার। সবাইকে খেদমত করতে পারাটাও আনন্দের।’

Ad Code

Responsive Advertisement